লিচু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।
লিচু গ্রীষ্মকালীন ফল এ রসালো ফল খুব কম সময়ের জন্য আসে। স্বাদ ও গন্ধের জন্য লিচু অনেকের কাছেই প্রিয়। শুধু স্বাদই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর এ ফল। নানা রকম অসুখের থেকে আপনাকে দূরে রাখবে এ ফল। আবার বেশি খেলে ক্ষতি হতে পারে।
১. লিচু হজমের জন্য ভালো। লিচুতে ফাইবার ও প্রচুর পানি থাকে; যা হজমের জন্য দারুণ কাজ করে। গরমে পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে পেটকে স্বস্তিতে রাখে।লিচু ত্বকের বলিরেখা দূর করে। বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না এবং ত্বক উজ্জ্বল করে।
২. গ্রীষ্মে নিয়মিত লিচু খেলে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি৬ এর দশ শতাংশ পাওয়া যায়। এ ভিটামিন শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করে। সঙ্গে রক্ষা করে প্রদাহজনিত রোগ থেকে।
৩. লিচু একটি কার্যকরী ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। এটি খেলে কমে প্রদাহ। সেইসঙ্গে এটি টিস্যুর ক্ষতি প্রতিরোধ করে।
৪. লিচুতে পর্যাপ্ত পানি এবং পটাসিয়াম থাকায়, কিডনিতে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এই ফল ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্বও কমায়। যে কারণে কমে কিডনির ক্ষতির ঝুঁকি।
৫ ওজন কমাতে সাহায্য করে যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য কার্যকরী একটি খাবার লিচু। এতে ক্যালোরি থাকে খুব কম। ফলে ওজন বাড়ার ভয় থাকে না।
৬. আঁশযুক্ত হওয়ায় লিচু খেলে তা দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। নিয়মিত লিচু খেলে হজমশক্তি উন্নত হয়।
৭. হার্ট ভালো রাখে হার্ট ভালো রাখাতে সহায়ক লিচু। এতে অলিগোনল থাকে; যা নাইট্রিক অক্সাইড তৈরিতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে এই নাইট্রিক অক্সাইড।
৮. লিচুতে থাকে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাংগানিজ এবং কপার। যা হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে।
৯.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে লিচু। এর অলিগোনল ভাইরাসকে বাড়তে বাধা দেয়। তাই গরমের এই সময়ে নিয়মিত লিচু খেলে বাঁচতে পারবেন সর্দি ও সাধারণ রোগ থেকে।
লিচু খাওয়ার অপকারিতা:-
খেতে সুস্বাদু হলেও ইচ্ছেমতো লিচু খাওয়ার সুযোগ নেই। দিনে ১০-১২ টি লিচু খাওয়া যেতে পারে। বয়স, শরীর, অসুস্থতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পরিমিতভাবে লিচু বা যেকোনো ফল খেতে হবে।
মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।
১. লিচু ওজন বৃদ্ধি করে।
২. লিচুতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, জরুরি ফ্যাটি অ্যাসিড নেই। ফলে বেশি পরিমাণে লিচু খেলে তা শরীরের স্বাভাবিক ব্যালেন্স নষ্ট করে।
৩.খালি পেটে লিচু খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
৪. রক্তের গ্লুকোজ কমে যায়।
৫.অতিরিক্ত লিচু খাওয়া অনেক সময় লো প্রেশারের রোগীর বুক ধরফর সমস্যার সৃষ্টি করে। যারা ডায়াবেটিসের ওষুধ খান, তাদের লিচু খাওয়ার সময়ে সতর্ক থাকতে হবে।
এদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিভেদে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত লিচু খেলে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এরফলে গর্ভবতী নারীদের শারীরিক জটিলতা দেখে দিতে পারে।
যেমন: ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা, মৃত সন্তান জন্মদান এবং অ্যালার্জির প্রকোপ বাড়িয়ে তুলতে পারে অনেকটাই।
তাই গর্ভাবস্থায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হবু মা সীমিত পরিমাণে (সারা দিনে ৩-৪টি) লিচু খেতে পারেন।
লিচুর উদ্ভিদ এবং উৎপাদন:
লিচুর বৃক্ষটি বাংলাদেশে প্রায়ই দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লিচু বৃক্ষ চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা এবং বরিশাল অঞ্চলে অবস্থিত। এই বৃক্ষগুলির উচ্চতা সাধারণভাবে ৫০ ফুট পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। লিচুর ফল মৌসুমে আসে, যার সময় অধিকাংশ অংশে এপ্রিল থেকে জুন মাসে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
স্বাস্থ্যগত সুবিধাগুলি
ভিটামিন সমৃদ্ধ: লিচু এ বিটামিন এ, বি, সি এবং ডি এ অধিক পরিমাণে থাকে, যা শরীরের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।
ফাইবার সমৃদ্ধ: লিচু ফাইবারের অত্যন্ত ভালো উৎস। এটি পাচনে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে।
স্বাস্থ্যকর খনিজ: লিচু মধ্যে পোটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন পর্য়াপ্ত পরিমাণে থাকে, যা স্বাস্থ্য উন্নত করে।
প্রোটিন এবং ফ্যাট ফ্রি: লিচু প্রোটিন ও ফ্যাট ফ্রি, যা বেশি সেহতে ভালো।
এন্টিআক্সিডেন্ট সুবিধা: লিচু অনেক এন্টিআক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।




Comments
Post a Comment