লাউ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।
লাউ/কদু খাওয়া মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। এটি একটি সস্তা, সহজে পাওয়া যাবে এবং পোষণশীল খাদ্য হিসেবে পরিচিত।
লাউ খাওয়ার উপকারিতা:
১. হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমেঃ-
যেহেতু লাউ এর মূল উপাদান হলো পানি তাই লাউ খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। যারা নিয়মিত সূর্যের আলোতে কাজ করে অথবা দীর্ঘক্ষন ধরে রোদে কাজ করার পর লাউ তরকারী খেলে শরীর বেশ ঠান্ডা হয় এবং শরীরের ভেতরের অস্বস্তি লাগা কমে। গরমের কারণে আমাদের শরীর থেকে যে পানি বের হয়ে যায় লাউ সেটার অনেকটাই পূরণ করে ফেলে। ফলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে যায়।
২. হজমে সাহায্য করে :-
লাউতে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় এবং অদ্রবনীয় ফাইবার আছে। দ্রবণীয় ফাইবার খাবার সহজে হজম করতে সাহায্য করে এবং হজম সংক্রান্ত সকল সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। এছাড়াও নিয়মিত লাউ খেলে অ্যাসিডিটি ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান করে। অদ্রবণীয় ফাইবার পাইলসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
৩. ত্বক ভালো করে :-
লাউতে আছে প্রাকৃতিক প্রোটিন ও ভিটামিন। তাই নিয়মিত লাউ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ত্বক ভেতর থেকে ভালো হয়। এছাড়াও যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ত্বকের তৈলাক্ততার সমস্যা অনেকটাই কমে যায় লাউ খেলে। এছাড়াও লাউ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেট পরিষ্কার রাখে। ফলে মুখে ব্রণ ওঠার প্রবণতাও কমে যায় অনেকটাই।

৪. প্রসাবে জ্বালা পোড়া কমায় :-
লাউতে প্রচুর পরিমাণে পানি আছে। তাই যাদের প্রসাবে জ্বালা পোড়ার সমস্যা আছে কিংবা প্রসাব হলদে হয় তাদের নিয়মিত লাউ খাওয়া উচিত। নিয়মিত লাউ খেলে এধরণের সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে।
৫. ওজন কমাতে :-
আপনি যদি ওজন কমানোর কথা ভেবে থাকেন তাহলে খাবার তালিকায় লাউ রাখুন।লাউ একটি কম ক্যালোরি সম্পন্ন ডায়েট। লাউ এর ৯৬% হলো পানি।লাউতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে এবং খুবই কম ক্যালোরি থাকে যা ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। তাই ওজন কমানোর চিন্তা করছেন যারা তাঁরা বেশি করে লাউ খান। তাহলে শরীরে কম ক্যালোরি যুক্ত হবে এবং পেটও ভরবে।
৬. পানিশূন্যতা দূর করে :-
জ্বর, ডায়রিয়া ও অন্যান্য বড় ধরণের অসুখে শরীরে পানির অভাব দেখা দেয়। প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় বলে পানি শূন্যতার সৃষ্টি হয় এবং তা কিডনির উপর প্রভাব ফেলে। তাই এ ধরণের অসুখের সময় প্রচুর পরিমাণে লাউ খেলে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হয়ে যায় এবং শরীর সতেজ থাকে।
৭. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে :-
রোদে বেরিয়ে রক্তচাপ যে কোনও সময় বেড়ে বা কমে যেতে পারে। দু’টোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। কিন্তু গরমে রোজ লাউ খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। লাউ খেলে প্রেশার ফল্ট করবে না।

৮. মানসিক চাপ কমায় :-
গরমের মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন? মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে কদু। এই সবজির মধ্যে ক্লোলিন রয়েছে। এটা একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং অ্যানজাইটি ও স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
৯. পোষণশীলতা:-
লাউ ভালো মাত্রায় ফাইবার, ভিটামিন, ও মিনারেলস যেমন ভিটামিন এ, সি, কে, ফোলেট, পটাসিয়াম ইত্যাদি ধারণ করে। এগুলি শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
১০.ডায়াবিটিস প্রতিরোধ:-
কিছু গবেষণা মোতাবেক, কদু ডায়াবিটিস প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে এবং ডায়াবিটিসে ভুগতান করতে সাহায্য করতে পারে।
১১.অস্থি স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য:-
কদু ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস, যা অস্থি স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

লাউ খাওযার অপকারিতা:-
গ্যাস ও বমির সমস্যা: -
কেটোকডু নামে একটি পদার্থ থাকতে পারে যা কিছু মানুষের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমে বমি ও গ্যাসের উৎপত্তি করতে পারে। এটি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তাই যদি কোনও ব্যক্তির গতি হয়, তাদের কেটোকডু এবং অন্যান্য লাউ এর প্রজাতি এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
প্রতিরোধ শক্তির বৃদ্ধি: -
লাউতে কিছুটা অ্যালার্জির প্রতিরোধ থাকতে পারে, সেই সময় লাউ খেলে কিছু লোকদের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
উচ্চ প্রস্রাবণতা এবং ইচ্ছাশক্তি কমতা:-
লাউ মিষ্টি এবং হালকা হওয়া মাধ্যমে তার উচ্চ প্রস্রাবণতা এবং ইচ্ছাশক্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি বিশেষভাবে মিষ্টি কুমড়া বা লাউ পাই হিসেবে খাওয়ার সময় মনিটর করা গুরুত্বপূর্ণ।
এই অপকারিতাগুলি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং শাস্ত্রীয় পরামর্শের মাধ্যমে মোটামুটি পূর্বানুমতি দেওয়া হয়েছে। যেভাবেই হোক, একজন ব্যক্তি যদি কদু খাওয়ায় প্রতিরোধ করতে পারে অথবা কোনও উচ্চ প্রস্রাবণতা বা অ্যালার্জি সম্পর্কিত সমস্যা থাকতে পারে, তাদের কোনও নতুন খাদ্য সংজ্ঞার জন্য তাদের ডাইট পরীক্ষা করার জন্য চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উত্তম।
Comments
Post a Comment