সুন্দর স্বাস্থের জন্য লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা।
সুন্দর স্বাস্থের জন্য লেবুর উপকারিতা
লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা
লেবু আমাদের সকলেরই সুপরিচিত একটি ফল। ভারতের আসাম ও চীনে লেবু প্রথম ব্যবহার হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের মতে লেবু বহুকাল আগে থেকেই ঔষধ রূপে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। লেবুতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং একাধিক পুষ্টি গুন। যা শরীরের নানা ধরনের রোগ সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতে সক্ষম। ওজন কমানোর জন্য লেবু খুবই উপকারী।
লেবুর পানির উপকারিতা।
এটি শরীরে ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের যোগান দেয়। এ ছাড়া শরীর অত্যাধিক গরম হয়ে গেলে ঠান্ডা লেবুর শরবত শরীরকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ফিরে আসতে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে লেবুর পানি খেলে শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের হয়ে যায়।
উপকারিতা
১.লেবুর রস ক্যান্সার
প্রতিরোধে সাহায্য করে
২.স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
৩.লেবু শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৪.হাঁপানি প্রতিরোধে লেবু
৫.উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
৬.কিডনিতে পাথর হওয়া রোধ করে
৭.লেবুতে ভিটামিন সি থাকে যা এন্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে এবং ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ
করে।
৮.লেবু বুকে জ্বালা ও আলসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
ব্রণে লেবুর রস দিলে ব্রণ দূর হয়
ক্যান্সার প্রতিরোধে লেবুর উপকারিতা –
ক্যান্সার প্রতিরোধে লেবুর ভূমিকা অতুলনীয়। কারণ লেবুতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি যা মানবদেহের ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। লেবুতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার উৎপাদনকারী কোষ গুলি কে মেরে ফেলতে সক্ষম।
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
স্ট্রোকের এর মত সমস্যা, বেশিরভাগ মহিলাদেরই হয়ে থাকে। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাইট্রাস ফল বা লেবু খুবই উপকারী। আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা লেবু সবচেয়ে বেশি পরিমাণে খেয়েছে তাদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি নিম্নতম ১৯ শতাংশ কম মানুষের ছিল।
ওজন কমাতে লেবু
শরীরের ওজন কমাতে লেবু খুবই উপকারী একটি ফল। লেবুতে উপস্থিত রয়েছে পেলিফেনল উপাদান যা স্থূলত্ব বা ওবিসিটি নামক রোগ থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম। লেবুতে উপস্থিত পেলিফেনল শরীরের ওজন বৃদ্ধি এবং ফ্যাট বৃদ্ধির হাত থেকে নিরাময় দিতে সাহায্য করে।
হাঁপানি প্রতিরোধে লেবুর উপকারিতা
লেবুতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি এর অভাবে হাঁপানি এবং সর্দি কাশির মত রোগ হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে লেবু খুবই উপকারী একটি ফল। লেবুতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা এন্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে সক্ষম। লেবুতে উপস্থিত এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
কিডনিতে পাথর হওয়া রোধ করে
কিডনিতে পাথর হওয়ার মত সমস্যা থেকে নিরাময় দিতে লেবু খুবই উপকারী একটি খাদ্য। কারণ লেবুতে উপস্থিতি রয়েছে সাইট্রেট নামক উপাদান যা কিডনিতে যে কোন পাথর হওয়া থেকে রোধ করতে সক্ষম। কিডনিতে যদি বড় পাথর থেকে থাকে, তবে ওই পাথরকে ভেঙে মূত্রের মাধ্যমে বের করতে সাহায্য করে সাইট্রেট।
লেবুর খোসার উপকারিতা
লেবুর চেয়ে লেবুর খোসায় বেশি পরিমাণে প্রোটিন এবং ভিটামিন রয়েছে। লেবুর খোসায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়া, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন সি যা আমাদের শরীরকে সুস্থ-সবল ও স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য খুবই সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লেবুর রস এবং লেবুর খোসা খাওয়া দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এক নজরে লেবুর খোসার ২ টি উপকারিতা।
১।ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে লেবুর খোসা খুব উপকারী। লেবুর খোসায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা ত্বক থেকে টক্সিক পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।
২।স্ট্রেস কমাতে লেবুর খোসার ভূমিকা অপরিসীম। লেবুর খোসাতে উপস্থিত রয়েছে সাইট্রাস বায়ো ফ্লেভোনয়েড উপাদান, যা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
চুলের যত্নে লেবুর উপকারিতা
লেবুর রসে উপস্থিত রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়ামসহ আরও অনেক উপকারী উপাদান। যেগুলি চুলের যত্নে খুবই উপকারী। লেবুর রস দিয়ে হেয়ার প্যাক বানাতে পারেন এবং লেবুর রসের হেয়ার প্যাক চুলে ব্যাবহার করলে চুল যেমন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে, তেমনি চুল পড়া রোধ হবে। লেবুর রস দিয়ে কিভাবে হেয়ার প্যাক বানানোর ২ টি নিয়ম।
১।অ্যালোভেরা জেল এর সঙ্গে লেবুর রস:- ১ চামচ অ্যালোভেরার জেলর সঙ্গে পরিমাণ মতো লেবুর রস নিন এবং এটি ভালো ভাবে মিশ্রণ করুন। তারপর ওই মিশ্রণটি ২০ থেকে ২৫ মিনিট মাথায় এবং চুলে লাগিয়ে রাখুন। তারপর হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই জেলটি মাথায় লাগালে চুল পড়া থেকে মুক্তি পাবেন।
২।নারকেল তেলের সঙ্গে লেবুর রস:-চুলের গোড়া শক্ত করতে ৩ চামচ আমলকীর তেল এবং ২ চামচ লেবুর রস একসঙ্গে মিশন করুন এবং শ্যাম্পু করার পর এই মিশ্রণটি মাথায় লাগান। এই মিশ্রণটি মাথায় লাগানোর ৫ মিনিট পর হালকা গরম জল দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। আপনার চুল হবে সুন্দর ও মুশ্রিন।
.jpg)
শরবত খেতে সবাই পছন্দ করেন। আর লেবুর শরবত তো সবারই পছন্দ। তবে লেবুর শরবত কিভাবে বাড়িতে বানাবেন তার পদ্ধতি কি আপনাদের জানা আছে। কিভাবে লেবুর শরবত বানাতে হবে তার কিছু পদ্ধতি আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। আসুন এক নজরে লেবুর শরবত বানানোর ২ টি নিয়ম:-
১।শসা লেবু শরবত
শসা ও লেবুর শরবত তৈরি করতে গেলে প্রথমে আপনাকে একটি শসা নিতে হবে। শসা টিকে ছোট ছোট করে কেটে একটি মিক্সার গ্রাইন্ডার পরিমাণমতো পানির সঙ্গে মিক্সড করে নিতে হবে। তারপর সেটি একটি জুসে পরিণত হবে। আবার এটিকে ছেঁকে নিয়ে একটি গ্লাসে ঢেলে রাখতে হবে। শসার জুস বা রসের সঙ্গে এক গ্লাস পানি দিতে হবে। ওই শসার রসের মধ্যে ৩ চামচ চিনি এবং পরিমাণমতো লেবুর রস দিতে হবে। সর্বশেষে দিতে হবে সামান্য একটু সাধারণ লবণ এবং ১ চা চামচ বিট লবণ। সব উপকরণ গুলি একসঙ্গে মিশ্রণ করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে আপনার শসার শরবত।
২।রুহ-আফজা লেবুর শরবত
রুহ-আফজা লেবুর শরবত তৈরি করতে গেলে প্রথমে একটি পাত্রে পরিমাণ মতো পানি দিতে হবে কমপক্ষে দেড় কাপ। ওই জলে পরিমাণমতো চিনি, পরিমাণ মত লবণ এবং পরিমাণ মতো রুহ-আফজা দিতে হবে। সব উপকরণ গুলি মেশালে তৈরি হয়ে যাবে আপনার রুহ-আফজা লেবুর শরবত।
.jpg)


Comments
Post a Comment